একেক বোলারের জন্য একেকজন ব্যাটসম্যান ছিলেন বিভীষিকা। সেই ব্যাটসম্যানের সামনে বোলিং করতে এলে চাপ তো ছিলই, রীতিমতো ভয় পেতেন তাঁরা। শচীন টেন্ডুলকার, সাঈদ আনোয়ার কিংবা ব্রায়ান লারাদের সামনে পড়লে অস্ট্রেলীয় স্পিন-জাদুকর শেন ওয়ার্নকে পর্যন্ত খাপছাড়া মনে হতো। ঠিক তেমনি মুত্তিয়া মুরালিধরনকেও এলোমেলো মনে হয়েছে অনেকের সামনে। গ্লেন ম্যাকগ্রা, কার্টলি অ্যামব্রোস, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিসরা অনেক ব্যাটসম্যানের জন্য আতঙ্ক মনে হলেও কেউ কেউ তাদের খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলতে পারতেন।
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদের দেখা সবচেয়ে চতুর ব্যাটসম্যান ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ের বরপুত্র ব্রায়ান লারা। লারার সামনে পড়লে যে তিনি চাপে পড়ে যেতেন, সেটা সরাসরি বলেননি পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অন্যতম এই তারকা। তবে তিনি মনে করেন, লারার বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলগুলো তাঁর প্রতিপক্ষের বোলারদের চাপেই ফেলে দিত।
লারার বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলের উদাহরণ টেনেছেন মুশতাক, 'উইকেটে লারা বোলারদের সঙ্গে নানা ধরনের কথাবার্তা বলতেন। এটা ছিল বোলারদের এলোমেলো করে দিতে তাঁর কৌশল। কিছু একটা বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে হতাশ বোলারকে তিনি বলতেন, “আমি আসলে এটা করতে চাইনি।” সে আমার দেখা সবচেয়ে চালাক ব্যাটসম্যান।'
ওয়ার্ন ও মুরালির মতো সেরা স্পিনারদের বিপক্ষেও লারা ছিলেন একই রকম দুর্দান্ত, 'ওয়ার্ন, মুরালিকেও লারা খুব ভালো খেলত।'
মুশতাক এ মুহূর্তে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে ইংল্যান্ড দলেরও স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। ইংল্যান্ড দল নিয়ে তাঁর ধারণা পাকিস্তানের আসন্ন সিরিজে দারুণ কাজে দেবে বলেই মনে করছেন, 'আমি ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে আমার ধারণা পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের বলব। এটা বোধ হয় ক্রিকেটেরই সৌন্দর্য। আমি আমার কাজের প্রতি শতভাগ যত্নশীল। আমি যখন ইংল্যান্ডের কোচ ছিলাম, তখন পাকিস্তান দলের সব তথ্য তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলাম।'
১৯৯০ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত পাকিস্তানের হয়ে ১৮৫ টেস্ট আর ১৬১ ওয়ানডে উইকেট পেয়েছেন মুশতাক। ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান দলের হয়ে খেলাই তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ঘটনা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন