আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৯ বছর আগে বিয়েও হয়েছে তার। হাঁটা-চলা, কথা-বার্তা, আচারে-ব্যবহার বা শারীরিক গঠন সব কিছুতেই তিনি ছিলেন নারী। জীবনের ৩০ বছর নারী বেশেই কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা দিলো পেটে ব্যথা। এর পরই জানা গেল তিনি আসলে পুরুষ! সম্প্রতি ভারতের বীরভূমের এমন ঘটনা ঘটেছে বলে খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ওই নারীর হঠাৎ করে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে অনেক কষ্ট করে তাকে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের ডাক্তার তাকে বেশকিছু পরীক্ষার পর জানান, তিনি টেস্টিকুলার ক্যান্সারে ভুগছেন। আসলে তিনি জিনগতভাবে পুরুষ। কারণ পুরুষের যৌনাঙ্গের ক্যান্সারের একটি প্রকার হলো টেস্টিকুলার ক্যান্সার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ধরণের ক্যান্সার শারীরিক গঠনের কারণে কোনো নারীর হওয়া সম্ভব না।
ওই হাসপাতালে ডাক্তার ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট ডা. অনুপম দত্ত এবং সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট ডা. সৌমেন দাস তার শরীরের যাবতীয় পরীক্ষার পর জানতে পারেন, আসলে জন্ম থেকেই ‘অ্যান্ড্রোজেন সেনসিটিভিটি সিন্ড্রোম’ নামে একটি বিরল রোগের শিকার তিনি। প্রতি ২২ হাজার মানুষর মধ্যে ১ জনের শরীরে এমন রোগ থাকে। এর ফলে একটি শিশু জেনেটিক্যালি পুরুষ হিসেবেই জন্ম নেয় কিন্তু তার মধ্যে নারীর সমস্ত শারীরিক বৈশিষ্ট্য থাকে।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে ডা. অনুপম দত্ত বলেন, ওনাকে দেখলে বা ওনার কণ্ঠস্বর শুনলে আপনার কোনোভাবেই মনে হবে না যে উনি জেনেটিক্যালি পুরুষ। স্তন থেকে শুরু করে জননেন্দ্রীয়, একজন নারীর মতো সব কিছুই রয়েছে তার শরীরে। কিন্তু জন্মের সময় থেকেই তার জরায়ু এবং ডিম্বাশয় কোনোটাই ছিল না। এমনকি জীবনে কখনও ঋতুস্রাবও হয়নি তার।’
তিনি বলেন, ‘রোগীর খুব পেটে যন্ত্রণা হওয়ার কারণে আমরা বেশকিছু ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করে দেখি। কিন্তু তাতে দেখা যায়, তার শরীরে অণ্ডকোষ রয়েছে। বায়োপসি করানো হয়। তারপরই ধরা পড়ে যে, তিনি আসলে টেস্টিকুলার ক্যান্সারে আক্রান্ত।
এখন ডাক্তাররা তার স্বামীকে পরামর্শ দিয়েছেন, প্রায় এক দশক ধরে যেভাবে বিবাহিত জীবন কাটিয়েছেন ঠিক সেভাবেই বাকি জীবনটা যেন কাটান তারা। জানা গেছে, ওই দম্পতি গত কয়েকবছর ধরে বেশ কয়েকবার গর্ভধারণের চেষ্টা করলেও সফল হচ্ছিলেন না। তবে সম্প্রতি জানা গেল এর কারণ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন