ঢাকা : কম্বোডিয়ায়
বেড়াতে যাওয়ার কোনো প্ল্যান আছে? তবে আপনার ঘোরার বাজেট আরও বাড়তে
চলেছে। করোনা পরিস্থিতিতে পর্যটকদের থেকে এবার এককালীন তিন হাজার মার্কিন
ডলার অগ্রিম জমা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কম্বোডিয়া সরকার।
অনেকে একে 'করোনা ডিপোজিট' আখ্যা দিয়েছেন।
বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় আড়াই লাখ টাকার সমান। ছুটি কাটাতে গিয়ে কোনো
পর্যটক করোনা আক্রান্ত হলে এই জমা অর্থ থেকেই তাঁর চিকিৎসা-সহ যাবতীয়
বন্দোবস্ত করা হবে। এছাড়া কারো মৃত্যু হলে সেখান থেকেই তার শেষকৃত্যে অর্থ
খরচ করা হবে।
করোনা সংক্রমণের গোড়ার দিকে বেড়াতে গিয়ে
কোনো পর্যটক করোনা আক্রান্ত হলে তার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা হবে
বলে ঘোষণা করেছিল কম্বোডিয়া। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আগের অবস্থান থেকে
সরে এসেছে তারা। ফলে পকেটে চাপ পড়তে চলেছে পর্যটকদের।
চলতি সপ্তাহে কম্বোডিয়া সরকারের অসামরিক
বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা
হয়েছে, সেদেশে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে ন্যূনতম ৩৮ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবিমার
নথি দাখিলের পাশাপাশি এবার থেকে পর্যটকদের ৩ হাজার মার্কিন ডলার জমা রাখতে
হবে। বিমানবন্দরে সরকারের বেঁধে দেওয়া ব্যাংকের শাখায় নগদ বা ক্রেডিট
কার্ডের মাধ্যমে জমা দিতে হবে এই টাকা। ছুটি কাটাতে গিয়ে কোনও পর্যটক করোনা
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বা কোভিড উপসর্গ দেখা দিলে জমা অর্থ তার
চিকিৎসার কাজে খরচ করা হবে।
এছাড়া বাধ্যতামূলক করানো টেস্টের যাবতীয়
খরচ সরকার কেটে নেবে ওই জমা টাকা থেকেই। কোন খাতে কীভাবে খরচ করা হবে, তাও
কম্বোডিয়া সরকার বিস্তারিত জানিয়ে দিয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুসারে এবার থেকে কম্বোডিয়ায়
ঘুরতে গেলে পর্যটককরা তিন ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে অন্তত একটির মুখোমুখি
হবেন। জনস্বার্থে এই পদক্ষেপ বলে সরকারের সাফাই।
প্রথম পরিস্থিতি:
কম্বোডিয়ার মাটিতে পা রাখার পরে পর্যটকদের টেস্টের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।
সেই সমস্ত ব্যবস্থা সেখানকার সরকারই করবে। তার জন্য পর্যটককে শুধু টাকা
দিতে হবে। যেমন যাতায়াত বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৫ মার্কিন ডলার। এছাড়া টেস্টের
জন্য ধরা হয়েছে ১০০ মার্কিন ডলার। এর পরে সরকারের বেঁধে দেওয়া একটি
হাসপাতালে সারা দিনের মতো পর্যটকদের কোয়ারেন্টাইন করা হবে। সে জন্য ধরা
হয়েছে ৩০ মার্কিন ডলার। খাবারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩০ মার্কিন ডলার।
টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ না এলে পর্যটকরা সব
মিলিয়ে মোট ১৬৫ মার্কিন ডলার খরচ করেই দেশে ঘোরার ছাড়পত্র পেয়ে যাবেন। জমা
রাখা বাকি টাকার কী হবে? দেশ ছাড়ার সময় প্রাপ্য অর্থ প্রত্যেক পর্যটককে
ফিরিয়ে দেয়া হবে।
দ্বিতীয় পরিস্থিতি: বিমানের
কোনো সহযাত্রীর করোনা ধরা পড়লে ওই বিমানের প্রত্যেক যাত্রীকে ১৪ দিনের
জন্য কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। এ জন্য মোট খরচ বাবদ পর্যটকদের থেকে প্রায় ১
হাজার ২৮১ ডলার নেওয়া হবে বলে প্রাথমিক হিসেবে জানিয়েছে কম্বোডিয়া সরকার।
'করোনা ডিপোজিট' হিসেবে যে ৩ হাজার মার্কিন
ডলার জমা রাখা হয়েছে সেখান থেকেই দৈনিক ভিত্তিতে কেটে নেওয়া হবে টাকা। আর
১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের পরে টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ এলে সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তিকে বাকি অর্থ দেশ ছাড়ার সময় দিয়ে দেওয়া হবে।
তৃতীয় পরিস্থিতি:
কম্বোডিয়ায় গিয়ে কোনো পর্যটকের করোনা ধরা পড়লে ভোগান্তির অন্ত নেই। নতুন
নির্দেশিকা অনুসারে, সেদেশে করোনার চিকিৎসা করা খরচ স্বাপেক্ষ ব্যাপার।
যদিও কী কারণে কত টাকা খরচ হতে পারে, তার একটা আগাম ধারণা সরকারের তরফে
দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলে সব খরচ বাদ দিয়ে
টাকা অবশিষ্ট থাকলে তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সব চেষ্টা যদি ব্যর্থ হয়?
সেকথাও ভেবে রেখেছে কম্বোডিয়া সরকার। তাই প্রত্যেকের করোনা ডিপোজিট থেকে
আগাম ব্যবস্থা হিসেবে শেষকৃত্যের জন্য ১,৫০০ মার্কিন ডলার আগেই সরিয়ে রাখা
হবে বলেও জানানো হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন