তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনো দেশই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল না। ফলে সবখানে পর্যুদস্ত অবস্থা হয়েছে এবং সব দেশের স্বাস্থ্য খাতই আলোচনা-সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে এবং হচ্ছে।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় ‘করোনা মহামারি মোকাবিলায় দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে জাতীয় সংসদসহ জনগণের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা’ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন ।
হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোসহ পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও এবং তাদের অর্থনৈতিক সংগতি আমাদের চেয়েও অনেক ভালো থাকা সত্ত্বেও তারা করোনা মহামারি ঠিকভাবে সামাল দিতে পারেনি, কারণ এটার জন্য কেউই এমনকি চীনও প্রস্তুত ছিল না। চীনে যে চিকিৎসক করোনাভাইরাসের বিষয়ে প্রথম সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ও তিনি পরে করোনায় আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন। প্রত্যেক দেশেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই পরিস্থিতিতে নানাভাবে সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তো এই পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে নিজেই পদত্যাগ করেছেন। জার্মানির একজন প্রাদেশিক মন্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। আরও অনেক দেশেই এ ঘটনা ঘটেছে।
‘আমাদের দেশের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই করোনাভাইরাস মোকাবিলা করা হচ্ছে’, উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম দিকে যেসব অসুবিধা ছিল, সমন্বয়েও কিছুটা ঘাটতি ছিল, সেটি এখন আর নেই । এখন অনেক সমন্বিতভাবে এই করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং সে কারণে আমাদের দেশে মৃত্যুর হার পৃথিবীর যে কটি দেশে খুব কম, তার মধ্যে একটি।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়ে সংসদে যে আলোচনা সমালোচনা হয়েছে, সেটিকে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সামনে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে যেভাবে আলোচনা হয়েছে, এটিই “বিউটি অব দ্য ডেমোক্রেসি”। এভাবেই গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, গণতন্ত্র এগিয়ে যায়। আমি মনে করি সংসদের আলোচনাটি দায়িত্ব পালনে এবং গণতন্ত্রকে সংহত করার ক্ষেত্রেও সহায়ক। প্রধানমন্ত্রী কী করবেন, সেটি প্রধানমন্ত্রীই বলতে পারবেন, অন্য কেউ বলার এখতিয়ার রাখেন না, বলতে পারবেনও না।’
পাট খাতকে বিএনপিই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল
এ সময় সাংবাদিকেরা ‘সরকার পাট খাত ধ্বংস করছে’ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের এ বক্তব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপিই পাট খাত ধ্বংস করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল এবং প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বিএনপির আমলে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী তারা আদমজিসহ অনেকগুলো জুট মিল বন্ধ করে দিয়েছিল, আবার শত শত কোটি টাকা মূল্যের অনেক জুট মিল কয়েক কোটি টাকায় ব্যক্তিমালিকানায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। এটি শুধু খালেদা জিয়া করেছেন তা নয়, জিয়াউর রহমানের আমল থেকে সেটি শুরু হয়েছিল।’
বর্তমান সরকার কোনো পাটকল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি বরং এই পাট কলগুলো ৪০ বছর ধরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লাভ করতে পারেনি এবং শ্রমিকেরাও সঠিকভাবে বেতন পাচ্ছিলেন না, জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই পাট খাতকে ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে এবং এই পাট খাতে উন্নতির জন্য সংস্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। শ্রমিকদের সব দেনা পাওনা মিটিয়ে দিয়েই তাঁদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় আনা হচ্ছে.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন